Bangladesh- রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তরুণদের অংশগ্রহণ ও রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনে কৌশল বনাম অপকৌশল :
বাংলাদেশের রাজনীতি বর্তমানে গভীর বিভাজনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে কৌশল ও নৈতিকতা হারিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে অপকৌশল ও স্বার্থপর রাজনীতি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নাগরিকদের বিশেষ করে তরুণদের অংশগ্রহণ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলেও, বাংলাদেশে তাদের রাজনৈতিক আগ্রহ ও সম্পৃক্ততা অনেক ক্ষেত্রেই কম পরিলক্ষিত ও উপেক্ষিত ছিলো ।তরুণদের এই বিচ্ছিন্নতা জাতির ভবিষ্যতের জন্য হুমকি স্বরূপ। কিন্তু ৫ আগস্ট এর মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণেরা প্রমান করেছে তারা বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে যথেষ্ট সচেতন এবং জীবন বাজি রেখে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে যার ফলে আপামর মানুষের আশার বাতিঘর হয়ে উঠেছিলো । তবে আমাদের এই বাংলাদেশ যখনই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে তখনই কেন যেন ষড়যন্ত্রের আবর্তনে পরে লাইনচ্যুত হয়েছে । সবাই কেন যেন খুব বেশি ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকতে চায় সেটা যে কোনো মূল্যে!
রাজনীতি একটি সমাজের উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা এবং জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। সঠিক কৌশল অবলম্বন করে রাজনীতিবিদরা দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে পারেন এবং জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হন। তবে, যখন এই কৌশলগুলি নৈতিকতা ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্ষমতালোভে পরিণত হয়, তখন তা অপকৌশলে রূপ নেয়, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর।
রাজনৈতিক কৌশল বনাম অপকৌশল:
রাজনৈতিক কৌশল হলো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য নৈতিক ও আদর্শিক পন্থা অবলম্বন করা। এটি দেশের স্বার্থ, জনগণের কল্যাণ এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। অন্যদিকে, অপকৌশল হলো স্বার্থান্বেষী ও অনৈতিক পন্থা, যা ক্ষমতা দখল বা ধরে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের পন্থা সাধারণত জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় সঠিক কৌশলের ভূমিকা:
সঠিক রাজনৈতিক কৌশল দেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের মর্যাদা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যখন রাজনীতিবিদরা নৈতিক ও আদর্শিক কৌশল অবলম্বন করেন, তখন তারা জনগণের আস্থা ও সমর্থন অর্জন করতে সক্ষম হন, যা তাদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে এবং দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
ক্ষমতালোভ ও অপকৌশলের নেতিবাচক প্রভাব:
ক্ষমতালোভে অন্ধ হয়ে অপকৌশল অবলম্বন করলে সমাজে বিভাজন, অবিচার এবং অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। এটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির দুর্বলতা, আইনের শাসনের অভাব এবং জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে। ফলে, রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি:
একটি আদর্শ রাজনীতি হওয়া উচিত সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য। রাজনীতিবিদদের উচিত জনগণের সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা, তাদের মতামতকে সম্মান করা এবং তাদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া। এটি কেবল নৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং একটি কার্যকর গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত।
রাজনীতিতে নৈতিকতা ও আদর্শের ভিত্তিতে সঠিক কৌশল অবলম্বন করে দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা এবং জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব। ক্ষমতালোভ ও অপকৌশল থেকে বিরত থেকে সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি পরিচালনা করলে সমাজে স্থিতিশীলতা, ন্যায়বিচার এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত হবে।